অষ্টম শ্রেণি শিল্প ও সংস্কৃতি বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন ২০২৪ pdf | Class 8 Art and Culture Annual Exam Suggestion 2024 pdf

অষ্টম শ্রেণি শিল্প ও সংস্কৃতি বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন ২০২৪ pdf | Class 8 Art and Culture Annual Exam Suggestion 2024

 অষ্টম শ্রেণি শিল্প ও সংস্কৃতি বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন ২০২৪ pdf | Class 8 Art and Culture Annual Exam Suggestion 2024 pdf

অষ্টম শ্রেণি শিল্প ও সংস্কৃতি বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন ২০২৪ pdf | Class 8 Art and Culture Annual Exam Suggestion 2024 pdf

অষ্টম শ্রেণি 
শিল্প ও সংস্কৃতি 
বার্ষিক পরীক্ষার সাজেশন ২০২৪

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:

১। গম্ভীরা গানের ৪ টি বৈশিষ্ঠ্য লেখো।
২। জাতীয় জাদুঘর সম্পর্কে বর্ণনা দাও।
৩। মহাস্থানগড়ের বৈশিষ্ঠ্য লিখ।
৪। লোকগানের বৈশিষ্ঠ্য লিখ।
৫। হস্তশিল্প কি? এ সম্পর্কে লিখ।
৬। শহীদ মিনার সম্পর্কে বর্ণনা দাও।
৭। ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনে মুকুন্দ দাসের ভূমিকা আলোচনা কর।
৮। রিকশা পেইন্টিং আমাদের নিজস্ব শিল্প - আলোচনা কর।
৯। রাজশাহী সিল্ক শাড়ি তৈরির কৌশল সংক্ষেপে লিখ।
১০। জারিনাস সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
১১। গাজীর পটের বৈশিষ্ঠ্য লিখ।
১২। অপরাজেয় বাংলা সম্পর্কেূ  লিখ।
১৩। কারুকলা সম্পর্কে লিখ।
১৪। পটচিত্র বলতে কি বুঝ?
১৫। বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।

রচনামূলক প্রশ্ন:

১. শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরির জীবন ও শিল্পকর্ম সম্পর্কে লিখ, 
২. প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রং তৈরির পদ্ধতি বর্ণনা কর,
৩। রাজশাহী অঞ্চলের স্থানীয় নাচ ও গান সম্পর্কে লিখ 
৪. সুন্দরী গাছ সম্পর্কে বর্ণনা দাও।
৫. 'শাবাশ বাংলাদেশ' ভাস্কর্য সম্পর্কে লিখ, 
৬. বাউল গানের বিবরণ দাও,
৭. বাংলাদেশ শিল্পকলা একাতেমির বিবরণ দাও 
৮. গাজী কালু চম্পাবতীর পালা সম্পর্কে বর্ণনা দাও

উত্তরমালা:

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:

১। গম্ভীরা গানের ৪টি বৈশিষ্ঠ্য:

  • এটি মূলত চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলের জনপ্রিয় লোকসংগীত।
  • গম্ভীরার গানে সাধারণত দু’জন কণ্ঠশিল্পী অংশ নেন: একজন "নানা" ও অন্যজন "নাতি"।
  • এতে হাস্যরসাত্মকভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক ও নৈতিক বিষয়গুলো উপস্থাপিত হয়।
  • গম্ভীরা সাধারণত বিশেষ উৎসব বা সামাজিক সচেতনতার জন্য পরিবেশিত হয়।

২। জাতীয় জাদুঘর সম্পর্কে বর্ণনা:

  • জাতীয় জাদুঘর ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত।
  • এটি বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, প্রত্নতত্ত্ব, শিল্প ও বিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রদর্শনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত, এটি দেশের সবচেয়ে বড় জাদুঘর।
  • জাদুঘরের সংগ্রহশালায় প্রাচীন মুদ্রা, মৃৎপাত্র, পাণ্ডুলিপি এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মারকসমূহ রয়েছে।

৩। মহাস্থানগড়ের বৈশিষ্ট্য:

  • মহাস্থানগড় বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন নগরী হিসেবে পরিচিত।
  • এটি বগুড়া জেলায় করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত।
  • এখানে প্রাচীন পুন্ড্রনগরী ও বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন রয়েছে।
  • মহাস্থানগড়ে প্রাপ্ত শিলালিপি ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো প্রাচীন বাংলার সভ্যতার সমৃদ্ধি প্রমাণ করে।

৪। লোকগানের বৈশিষ্ট্য:

  • লোকগান সাধারণত প্রাকৃতিক পরিবেশ, সামাজিক ও পারিবারিক বিষয়বস্তুকে কেন্দ্র করে রচিত হয়।
  • এ গানগুলো সাধারণ মানুষের মুখে মুখে রচিত এবং প্রচলিত।
  • সুর ও তাল সহজ এবং প্রাঞ্জল, যা সাধারণ মানুষের হৃদয়ে দাগ কাটে।
  • বাউল, ভাটিয়ালি, গম্ভীরা, জারি, সারি, পল্লীগীতি ইত্যাদি লোকগানের প্রকারভেদ।

৫। হস্তশিল্প কি? এ সম্পর্কে লিখ:

হস্তশিল্প বলতে হাতে তৈরি শিল্পকর্মকে বোঝানো হয়। এটি সাধারণত ঐতিহ্যবাহী ও স্থানীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়। বাংলাদেশের নকশিকাঁথা, মাটির জিনিস, জামদানি শাড়ি, পাটজাত দ্রব্য প্রভৃতি হস্তশিল্পের অন্তর্ভুক্ত। হস্তশিল্প স্থানীয় সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতাকে প্রতিনিধিত্ব করে।

৬। শহীদ মিনার সম্পর্কে বর্ণনা:

শহীদ মিনার বাংলাদেশের মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নির্মিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অবস্থিত, যা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নির্মিত। এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চেতনার প্রতীক হিসেবে কাজ করে। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

৭। ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনে মুকুন্দ দাসের ভূমিকা:

মুকুন্দ দাস ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলেছিলেন তাঁর গান ও পালাগানের মাধ্যমে। তিনি লোকগান ও নাটকের মাধ্যমে স্বাধীনতার বার্তা সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। তাঁর "স্বদেশি" পালাগান ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে গণচেতনা তৈরিতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। তিনি নিজের কণ্ঠে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।

৮। রিকশা পেইন্টিং আমাদের নিজস্ব শিল্প - আলোচনা:

রিকশা পেইন্টিং বাংলাদেশের এক বিশেষ ধরনের লোকশিল্প। এটি ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের রিকশাগুলোকে সজীব ও আকর্ষণীয় করে তোলে। রিকশা পেইন্টিংয়ের মধ্যে স্থানীয় কাহিনী, প্রাকৃতিক দৃশ্য, চলচ্চিত্রের দৃশ্য এবং ফুল-ফলের চিত্র দেখা যায়। এটি বাংলাদেশি সংস্কৃতির একটি সমৃদ্ধ ধারার প্রতীক, যা সাধারণ মানুষ ও তাদের সৃষ্টিশীলতাকে তুলে ধরে।

৯। রাজশাহী সিল্ক শাড়ি তৈরির কৌশল সংক্ষেপে:

  • রাজশাহীর সিল্ক শাড়ি তৈরিতে প্রথমে কোকুন থেকে সুতা তৈরি করা হয়।
  • এরপর সুতাকে ধৌত করা হয় ও তাঁতে বোনা হয়।
  • শাড়ির বুননে মসলিনের মতো মিহি সুতা ব্যবহার করা হয়, যা শাড়িকে মোলায়েম ও নরম করে তোলে।
  • রাজশাহী সিল্ক শাড়ির নকশা ও বুনন প্রক্রিয়ার জন্য এটি বিখ্যাত।

১০। জারিনাস সম্পর্কে সংক্ষেপে:

  • জারিনাস হচ্ছে এক ধরনের হস্তশিল্প বা শিল্পকর্ম, যা মেটাল বা ধাতুতে খোদাই করে তৈরি করা হয়।
  • এটি বিশেষ করে সোনা বা রুপার উপর খোদাইয়ের কাজ হিসেবে পরিচিত।
  • শিল্পীদের দ্বারা তৈরি করা জারিনাসের কাজগুলো অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও অলংকৃত হয়।

১১। গাজীর পটের বৈশিষ্ট্য:

  • গাজীর পট একটি প্রচলিত বাংলা লোকশিল্প।
  • এটি মূলত ফোক-আখ্যান বা ধর্মীয় কাহিনী চিত্রিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • পটের চিত্রগুলোতে মিশ্রধর্মী গল্প, যেমন ইসলামি ও হিন্দু পুরাণ, চিত্রায়িত হয়।
  • গাজীর পটের চিত্রণ সাধারণত প্রাচীন বাংলার লোকজ ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটায়।

১২। অপরাজেয় বাংলা সম্পর্কে লিখ:

অপরাজেয় বাংলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিখ্যাত ভাস্কর্য। এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব ও জাতীয় চেতনার প্রতীক হিসেবে ১৯৭৯ সালে নির্মিত। ভাস্কর্যে একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন কৃষক এবং একজন গ্রামীণ নারীর প্রতিকৃতি রয়েছে, যা জাতীয় মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে প্রকাশ করে।

১৩। কারুকলা সম্পর্কে লিখ:

  • কারুকলা বলতে সৌন্দর্য ও সৃজনশীলতার সঙ্গে যুক্ত শিল্পের শৈল্পিক নির্মাণকে বোঝায়।
  • এটি সাধারণত মাটি, কাঠ, পাথর বা ধাতু দিয়ে তৈরি করা হয়।
  • মাটির জিনিস, বাটিক, পটচিত্র, কাঠের কারুকাজ প্রভৃতি কারুকলার উদাহরণ।
  • বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতিতে কারুকলার প্রচুর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

১৪। পটচিত্র বলতে কি বুঝ:

পটচিত্র হচ্ছে এক ধরনের চিত্রশিল্প যেখানে কাপড় বা কাগজে কাহিনিমূলক চিত্র আঁকা হয়। এটি সাধারণত ধর্মীয়, সামাজিক, বা পৌরাণিক কাহিনির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। পটচিত্র বাংলার প্রাচীন লোকশিল্পগুলোর মধ্যে একটি, যা গান ও কাহিনী আকারে চিত্রিত হয়।

১৫। বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সম্পর্কে সংক্ষেপে:

  • বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন হলো সুন্দরবন।
  • এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবস্থিত এবং এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।
  • সুন্দরবন রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বিভিন্ন বিরল প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল।
  • সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় বন্যা ও ঝড় থেকে প্রতিরক্ষার কাজ করে।

রচনামূলক প্রশ্নোত্তর:

১. শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরির জীবন ও শিল্পকর্ম

কাইয়ুম চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী এবং শিল্প নির্দেশক, যিনি দেশীয় শিল্পকলা ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি ১৯৩২ সালের ৯ মার্চ ফেনী জেলার শ্রীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকা আর্ট কলেজ (বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তাঁর শিল্পশৈলীতে লোকজ ও প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়।

কাইয়ুম চৌধুরী বিশেষভাবে বইয়ের প্রচ্ছদ, পোস্টার ও শিল্পকর্মে অবদান রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গ্রামীণ জীবনের চিত্রায়ণ তাঁর চিত্রকর্মে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘মাতৃভূমি’, ‘পল্লী জীবন’, এবং বিভিন্ন পোস্টার, যেগুলো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় জনগণকে প্রেরণা জুগিয়েছিল। তিনি তাঁর চিত্রকর্মে বাঙালি ঐতিহ্য ও জাতীয় চেতনাকে বিশিষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। ২০১৪ সালে তাঁর মৃত্যু হয়, তবে তাঁর কাজ আজও প্রভাবশালী রয়ে গেছে।

২. প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রং তৈরির পদ্ধতি

প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রং তৈরির পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত, যেখানে গাছপালা, মাটি, খনিজ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উৎস থেকে রং তৈরি করা হয়। প্রাকৃতিক রং তৈরির কয়েকটি প্রধান ধাপ নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • উদ্ভিদ থেকে রং: উদ্ভিদের পাতা, ফুল, ফল এবং মূল থেকে রং তৈরি করা হয়। যেমন, গাঁদা ফুল থেকে হলুদ রং, হালুয়া গাছের ছাল থেকে লাল রং এবং পালংশাকের পাতা থেকে সবুজ রং তৈরি করা যায়। এসব উপাদান প্রথমে সংগ্রহ করে গরম পানিতে ফোটানো হয় এবং তারপরে রস বের করে কাপড় বা অন্য কোনো মাধ্যমের সাথে মিশিয়ে রং প্রস্তুত করা হয়।
  • মাটি ও খনিজ থেকে রং: লাল, কালো ও হলুদ রং তৈরি করতে বিভিন্ন ধরণের মাটি এবং খনিজ পদার্থ ব্যবহার করা হয়। যেমন, লাল মাটি বা অক্সাইড থেকে লাল রং এবং কাঠকয়লা থেকে কালো রং তৈরি করা সম্ভব।
  • প্রাণিজ উৎস: কিছু ক্ষেত্রে প্রাণিজ উপাদান থেকেও রং তৈরি করা হয়, যেমন কচ্ছপের খোলস থেকে কিছু রং বের করা সম্ভব।

এভাবে প্রাকৃতিক উপাদান থেকে পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যকর রং তৈরি করা যায়।

৩. রাজশাহী অঞ্চলের স্থানীয় নাচ ও গান

রাজশাহী অঞ্চল বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এবং এই অঞ্চলের সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এখানকার স্থানীয় নাচ ও গানগুলো ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতির একটি অমূল্য অংশ।

  • নাচ: রাজশাহী অঞ্চলের জনপ্রিয় নাচগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গম্ভীরা নৃত্য। গম্ভীরা নাচ মূলত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রচলিত। এই নাচে সামাজিক, রাজনৈতিক ও নৈতিক বার্তা দেওয়া হয়। এটি সাধারণত উৎসবের সময় বা বিশেষ অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় এবং এটি একটি নাটকীয় উপস্থাপনা।
  • গান: রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান গানগুলোর মধ্যে অন্যতম গম্ভীরা গান, যা হালকা মেজাজে রচিত হলেও এতে সমাজের গভীর বার্তা থাকে। এছাড়া বাউল গান, ভাটিয়ালি এবং পল্লীগীতি এই অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়। বাউল গানে মানবতাবাদ ও আধ্যাত্মিকতার প্রতিফলন ঘটে, যা মানুষকে আত্মজিজ্ঞাসার দিকে উদ্বুদ্ধ করে। রাজশাহীর গানগুলো সাধারণত প্রকৃতি, জীবনযাপন এবং মাটির সাথে সম্পর্কিত।

৪. সুন্দরী গাছ সম্পর্কে বর্ণনা

সুন্দরী গাছ সুন্দরবনের প্রধান ম্যানগ্রোভ প্রজাতির একটি উদ্ভিদ। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের সুন্দরবন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়। এই গাছটি ম্যানগ্রোভ পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে এবং লবণাক্ত পানিতে বেড়ে ওঠার বিশেষ ক্ষমতা রাখে। সুন্দরী গাছের বৈশিষ্ট্য হলো এর গুঁড়ি বেশ মোটা এবং কাঠটি অত্যন্ত শক্তিশালী।

  • উপযোগিতা: সুন্দরী গাছের কাঠ অত্যন্ত মূল্যবান এবং টেকসই হওয়ায় এটি নৌকা নির্মাণ, ঘরবাড়ির কাঠামো তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। সুন্দরী গাছের শিকড় পানির স্রোত প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, যা ভূমিক্ষয় রোধে সহায়ক।
  • প্রাকৃতিক পরিবেশে অবদান: সুন্দরী গাছ সুন্দরবনের পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মাটি ক্ষয় প্রতিরোধ করে এবং বন্যা ও ঝড়ের সময় উপকূলীয় এলাকা রক্ষা করে। সুন্দরবনের এই গাছগুলো রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলও সরবরাহ করে।

৫. 'শাবাশ বাংলাদেশ' ভাস্কর্য সম্পর্কে লিখ

‘শাবাশ বাংলাদেশ’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরত্ব এবং বাঙালি জাতির অদম্য সাহসের প্রতীক হিসেবে খ্যাত একটি ভাস্কর্য। এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্বরূপ স্থাপিত হয়েছিল। ভাস্কর্যটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৭৩ সালে এবং এটি উন্মোচন হয় ১৯৯৭ সালে।

এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন বিশিষ্ট ভাস্কর নিতুন কুণ্ডু। ভাস্কর্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো একজন মুক্তিযোদ্ধার মূর্তি, যার হাত উপরে তোলা এবং কাঁধে বন্দুক রাখা, যা বীরত্ব ও স্বাধীনতার প্রতীক। ‘শাবাশ বাংলাদেশ’ ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের জাতীয় চেতনা ও সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

৬. বাউল গানের বিবরণ

বাউল গান হলো বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও আধ্যাত্মিক লোকসংগীতের একটি ধারা। এটি মূলত বাউল সাধকরা রচনা ও পরিবেশন করেন, যারা ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক পথে জীবনযাপন করেন। বাউল গান মূলত আধ্যাত্মিক ও সুফিবাদী দর্শনের ওপর ভিত্তি করে রচিত হয়।

  • বিষয়বস্তু: বাউল গানে প্রধানত মানবাত্মা, আল্লাহর প্রেম, মানব প্রেম এবং জীবনের অর্থ খোঁজার মতো আধ্যাত্মিক বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। এটি এক ধরণের আধ্যাত্মিক সাধনার প্রকাশ।
  • গান পরিবেশনা: বাউল গান সাধারণত একতারা, দোতারা, খোল ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে পরিবেশিত হয়। বাউল গায়করা সাদা পোশাক পরেন এবং গানের মাধ্যমে আত্মার মুক্তির কথা প্রচার করেন।
  • প্রভাব: বাউল গান শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও সমানভাবে জনপ্রিয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাউল গান দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর সাহিত্য ও সংগীতে বাউল ভাবধারা গ্রহণ করেছিলেন।

৭. বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির বিবরণ

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও শিল্পকলার উন্নয়ন ও সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠিত একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। একাডেমির মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সমন্বয় ও প্রসার করা।

  • কার্যক্রম: শিল্পকলা একাডেমি নাটক, সংগীত, নৃত্য, চিত্রকলা, ভাস্কর্য, কারুশিল্প এবং চলচ্চিত্রের মতো বিভিন্ন শিল্পকলার প্রদর্শনী ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। এটি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে।
  • গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা: একাডেমি বাংলাদেশি শিল্পীদের উৎসাহিত করে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁদের কাজ তুলে ধরে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, ওয়ার্কশপ, প্রদর্শনী এবং উৎসবের মাধ্যমে এটি শিল্পের প্রসার ঘটাতে অবদান রাখে।

৮. গাজী কালু চম্পাবতীর পালা সম্পর্কে বর্ণনা

গাজী কালু চম্পাবতীর পালা বাংলা লোককাহিনী ও নাট্যসংস্কৃতির একটি অমূল্য অংশ। এটি একটি প্রাচীন পালাগান, যা বাংলার মুসলিম শাসকদের সময়কার ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক কাহিনির ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।

  • কাহিনী: গাজী কালু ছিলেন একজন বীর মুসলিম সাধক এবং চম্পাবতী ছিলেন তাঁর প্রেমিকা। পালাটির মূল কাহিনী ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতা এবং প্রেমের সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে। এতে গাজীর বীরত্ব ও সাধনার পাশাপাশি চম্পাবতীর প্রতি তাঁর গভীর প্রেম ফুটে ওঠে।
  • প্রদর্শন: গাজী কালু চম্পাবতীর পালা সাধারণত লোকনাট্য ও পালাগানের মাধ্যমে পরিবেশিত হয়। এতে সুর, ছন্দ এবং নাট্যকলার সমন্বয়ে কাহিনী উপস্থাপন করা হয়।
  • সংস্কৃতির প্রতিফলন: এই পালাগান বাংলার লোকসংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে পরিচিত, যা ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ এবং প্রেমকে একত্রিত করে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়।

Follow Talukdar Academy Page Join Talukdar Academy Group Join SSC Exam Batch Group Class 9 Facebook Study Group Class 8 Facebook Study Group Class 7 Facebook Study Group Class 6 Facebook Study Group Join WhatsApp Channel Join Telegram Channel

About the author

Zahidul Islam Talukder
I am Zahidul Islam Talukder, Founder and CEO of Talukdar Academy and Talukdar Helpline. I still like to write articles,post and information on this website as much as i can. Please pray for me.You can follow me from: facebook youtube instagram

إرسال تعليق